১৪ আগ, ২০১৪

দামিনী সেন



শাঁকচুন্নির কথা


আমি হলুম শাঁকচুন্নি, শেওড়া গাছে থাকি,
ভুত-ভুতুনির সংসারেতে গতর দিয়ে খাটি।
সন্ধ্যা ছটায় ভুত মহাশয় বিছনা ছেড়ে ওঠেন,
দাঁতটি ধুয়েই ভীষণ গলায় চায়ের হাঁক জোড়েন।
ভুতুনি তখনও শুয়ে শুয়েই বাড়ান গলা খোনা,
-
ওরে শেঁকো, গেলি কোথা, খোকার ঘুম ভাঙা।'
সেই যে শুরু আমার রাতি, ব্যস্ত ছোটাছুটি,
এই ভুতুনি হাঁক ছাড়ে, ঐ ভুতুম সোনা দুটি;
সন্ধ্যে থেকেই হাজারো কাজ, বিষম হাঁকডাক,
দাঁড়াও বাপু, আগে তো ভুত অফিস বেড়িয়ে যাক।
তারও পরে আছে ইস্কুল ভুতুম সোনাদের।
গেলো কোথা বিচ্ছুদুটো ! ' তো বিষম ফের।
ঐ ঐ তো মগডালে ঐ বাবলা গাছটার,
ওরে ওরে বাপ আমার, দিস না অমন ঝাড়।
আমি কী আর তোদের মতো সদ্য মরা ভূত !
বাবলা কাঁটার জ্বালা রে বাছা ভীষণই কিম্ভূত।
আস্তে নাম, বাছা আমার, মারবো এক কিল !
ওরে না না, চেঁচাস না রে, 'তো ভীষণ মুশকিল।
শুনলে তোদের মা ভুতুনি ছাড়বে আমায় ওরে !
তোদের জ্বালায় মরেও বুঝি শান্তি পাবো না রে !
এবার ওদের টেনে নামাও, মাজো দুটোর গা,
সাজাও গোছাও, খাওয়াও থোওয়াও, কী যে জ্বালা !

ভুতুমরা তো বিদেয় হলো, এবার ভুতুনির খিদমত,
বটের ঝুরির দোলনাটা গুছিয়ে রাখ তো ঝটপট;
হাঁড়িটা কি ফ্যাটফ্যাটে, কাদা মাখা ওরে;
এমন আস্ত জামা বাবু পড়বে কেমন করে !
হাজার তার বায়নাক্কা সামলে যখন উঠি,
দেখি চাঁদ ডুবেছে পশ্চিমেতে, রাত্রি তখন দুটি।
এতক্ষণে শেওড়া ডালে পা ছড়িয়ে বসি,
মামদোটাকে কাছে ডাকি, গল্প জুড়ি কষি।
সুখ-দুঃখের দুটো কথা কই, তাতেও তোদের জ্বালা !!
এই জন্যই তো মানষেগুলোর ঘাড় মটকানোর পালা।                               

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন