১৪ আগ, ২০১৪

কাশীনাথ গুঁই



কখনো মেঘ


সকালে বাজারের পথে একটা জটলায় আটকে পড়লাম একটা বাচ্চা কচুরীর দোকানে খাওয়ার পর পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছে তাই জটলাবাচ্চাটা এপাড়ায় অপরিচিত, দানসাগর নাহলেও দোকানের পয়সাটা দিয়ে সরিয়ে নিলাম ওকে

বাজারের থলিটা ওর হাতে ধরিয়ে বাজারটা সেরে ওর কথা জানতে চাইলামওর মা ভোরে রেললাইনে গলা দিয়েছে ওকে ঠেলে ফেলে দিয়ে-রেলপুলিশ দায় কমাতে ওকে স্রেফ বাজারের পথে ভাগিয়ে আনক্লেমড বডি চালান করেছে মর্গে ওর বাবা বছরখানেক আগে ক্ষেতের কাজে সাপের ছোবলে মরার পরে মায়ের বিড়িবাঁধা আর কাগজের ঠোঙার মজুরিতে চলছিল কোনক্রমে কদিন জ্বরে পড়ে অনাহারে কাটিয়ে বেচারী সহজ রাস্তার খোঁজে রেললাইনে নিজেকে বাঁচিয়ে এই বছর পাঁচেকের রিমিকে অদৃষ্টের হাতে ছেড়ে নিশ্চিন্ত হল
অগত্যা ওকে বাড়ীতে নিয়ে আসা ছাড়া উপায় ছিল না সংক্ষেপে বুঝিয়ে গিন্নীর হাতে ওকে ছেড়ে স্নানে গেলাম অফিস ফেরতা কিছু জামাকাপড়ও আনলাম সহকর্মীদের নানারকম প্রস্তাব গিন্নীর সাথে আলোচনা করে ওকে নিজেদের মত মানুষ করার সিদ্ধান্ত নিলেও থানায় জাননোর কথা ভাবলাম
আজ এতবছর পর ভাবি, ভাগ্যিস সেদিন সাহস করে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলামআমার প্রতিষ্ঠিত দুইছেলে কর্মসূত্রে বিদেশে, ঘরসংসারও সেখানে, দুতিনবছর পর কালেভদ্রে দেখা হয় কি হয়নাতা বলে আমাদের স্বার্থ দেখতে গিয়ে ওদের ভবিষ্যতটাতো আর জলাঞ্জলি দিতে পারিনারিমি এখন স্কুলে পড়ায়, বিয়ে থা করেছে, এক মেয়ের মাকিংবা হয়তো আমাদেরও মা, আমাদের দুই বুড়োবুড়ির শেষ সম্বল রিমিই

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন