১৪ জুন, ২০১৩

কথোপকথন - ইমেল নাঈম

কথোপকথন
ইমেল নাঈম



- কি ভাবছ?
- জানো আমি কখনো গ্রাম দেখিনি। শহরের
ইট পাথরের ধুলোর মাঝেই বেড়ে ওঠা আমার।
- কেন দেখবে ? আমি নিয়ে যাবো তোমায়।
- সত্যি নিয়ে যাবে ? গ্রাম মানে একেবারে প্রাচীন গ্রাম
যেখানে সভ্যতার আলো পৌঁছায় নি আজও।
- মুস্কিলে ফেলে দিলে। এমন গ্রাম তো এখন জাদুঘরেও মিলবে না।
- ওহ আচ্ছা !
- কি মন খারাপ করলে?
- নাহ , কিছুই তো করার নেই। সভ্যতা যখন
গ্রামকে রাঙায় নিজের আলোতে
সেখানে তোমার আমার কিবা করার থাকে?
- তাহলে গুমরো মুখে প্যাঁচার সাজ নিচ্ছ যে?
- প্যাঁচার সাজ পেলে কই? ভাবছি গ্রাম
দেখতে কেমন? তুমি কি বলবে সামান্য কিছু?
- গ্রাম বলতে প্রথমে চোখের সামনে ভেসে ওঠে
মেঠো পথ আর তার উপর দিয়ে বয়ে চলে গরুর গাড়ি।
- এ্যাই, তুমি কখনো গরুর গাড়িতে চরেছ?
- নাহ তবে দাদুর কাছে শুনেছি, সেটাই বলার চেষ্টা করছি ।
- ওহ , আচ্ছা। গ্রামের ঘরবাড়ি সম্পর্কে কিছু বল তো আমাকে।
- গ্রামের ঘর বাড়ি গুলো মাটির তৈরি,
কোথাও সেগুলোর চালা দেয়া হয় খড়ের,
যারা একটু ধনী তাদের ঘর হয় টিনের।
_ গ্রামের মানুষগুলো অনেক সহজ সরল,
তারা সকাল থেকে রাত অব্ধি পরিশ্রম করে।
- এটা তো শহরের মানুষরাও করে, এতে বলার কি আছে?
- হুঁ করে তো, কিন্তু একটু পার্থক্য আছে।
- কিসের পার্থক্য?
- তুমি তাদের দিকে তাকালেই বুঝবে তারা কোথায় কোন কাজে যাচ্ছে,
এই যেমন কাঁধে লাঙ্গল বা মই সেই সাথে
জোড়া বলদ দেখলেই বুঝে যাবে তারা কৃষক।
- ওহ আচ্ছা, এখন বুঝেছি! গ্রামের উৎসব নিয়ে কি কিছুই বলবে না?
- হুম, গ্রামের কিছু উৎসব নিয়মিত হত
যা কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সমাজ থেকে।
- কোন কোন উৎসব?
- এই ধর, আগে প্রতি সপ্তাহের শেষে পুঁথি পাঠের উৎসব বসত,
এখন হারিয়ে গেছে। যেমনটি হারিয়ে গেছে পালা গান।
হালখাতাও হারিয়ে গেছে।
- কি বল হালখাতাও হারিয়ে গেছে।
- হুঁ। অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে গ্রাম থেকে।
এখন হালের গরুর জায়গা দখল করেছে ইঞ্জিন চালিত যন্ত্র।
মাটির ঘরও হারিয়ে গেছে, সেই জায়গা
দখল করেছে ইট পাথর আর রড।
গরু গাড়ি নেই , পাকা রাস্তায় এখন কালো ধোঁয়ার চাষাবাদ হয় এখানে।
- কি বল , তবে কি গ্রাম হারিয়ে যাচ্ছে সমাজ থেকে।
- নাহ গ্রাম হারাচ্ছে না, গ্রাম সময়ের সাথে আধুনিক হচ্ছে।
শুধু হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন