১৪ জুন, ২০১৩

কবিতা - সুজন ভট্টাচার্য

আমরা
সুজন ভট্টাচার্য


আমাদের জন্মে নেই কোন সুলক্ষণী গান,
কোনো প্রাচীন তারা
আচমকাই উড়ে এসে আর্তনাদে মায়ের
হয় নি সাক্ষী কোনো প্রথম যাত্রায়।
আমাদের জন্মে কোনো দৈববাণী নেই
নেই কোনো বিধাতার গোপন প্রকাশ।
সমুদ্র-গভীর থেকে যুগান্তের স্রোতে
কোথাও শোনায় নি, ওহে, আমাদের নাম;
তাবৎ ঋক আর প্রজ্ঞাবান সন্দর্ভমালা
তাদের কাছেও নেই আমাদের গ্রাম,
শুকনো শহরতলী অথবা
ট্রেনের ধাবমান ক্যানভাস -
যাদের আড়ালে রেখেই আমাদের বেঁচে থাকা,
বড় বেশি হ্যাংলামো করে-
তাদের ঠিকানা কোনো।

আমাদের জন্ম হলে আকুল উল্লাসে
পৃথিবীর গোলাঘরে ইঁদুরের মড়ক শুধু;
যেহেতু বর্ণনীয় নয়,
আমাদের প্রাপ্য থাকে শুধু তাদের মাত্রায়।
আমাদের জন্মদিনে সুতীব্র দহন নিয়ে
পাউরুটি-স্বপ্ন থাকে,
আর সামান্য চায়ের কাপ
যদিও তার হাতলটা ভাঙা।
যেহেতু আমাদের জন্ম নিয়ে কোনো শাস্ত্রবাক্য নেই
নেই প্রাচীন ঋষির কোনো সুগভীর শ্লোক,
স্বচ্ছন্দে আমরা তাই মুষ্টিযুদ্ধ করি
নিজেদের ছায়ার সাথে।

আমাদের অতীত নেই
সমাবেশে ঘোষণার মত,
আমাদের বর্তমান নেই,
যা কিছু সাজানো যায় উজ্বল বর্ণমালা দিয়ে;
আমাদের আগামী বলে কিছু হয়তো আছে,
না হলে কিসের জোরে
আদ্যোপান্ত এতদূর টেনে নিয়ে যাই!
এভাবেই অহরহ আমাদের নিমগ্ন বাঁচা
জীবন নামক এক বাহাত্তুরে রূপমালা কন্যাটিকে নিয়ে।
যেহেতু আমাদের পৃথক কোনো বাতায়ন নেই
অসীম গর্ভ থেকে যার ক্রমান্বয়ে বয়ে যাবে
চেতনার মুকুল,
ভোরের প্যাসেঞ্জার ধরে অগুনতি হাতে
আমাদের নিষ্ক্রমণ তাই আরো কিছু দূরত্বের সন্ধানে।

1 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন