আমাদের তারারা
সায়ক চক্রবর্তী
অনেকদিন পর রাতের মত রাত পেলাম - ঠিক যেমন রাত হওয়া উচিৎ - ঐতিহাসিক তারা, ছেলেভোলানো চাঁদ আর কবির উর্বর ক্ষেতি - কালো অথচ অর্থপূর্ণ আকাশ। তারা আর আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে বিনিময় করছি সৌন্দর্য, স্মৃতি আর বিষাদ। তারাদের সাথে আমাদের মিল পাই যখন সেও হারায় মেঘের আড়ালে। হাল্কা নীলাভ আভা পরিমাণমত ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের উপর - চুম্বনরত প্রেমিক-প্রেমিকাদ্বয়ের উপর, ষ্টেশনমাস্টারের অন্ধ ফ্ল্যাগের উপর, মায়ের ব্যস্ততামাখা উলকাঁটার উপর, নোংরা ছেলেটার প্রশ্নময় ঘায়ের উপর...আরও অনেকের উপর সমতা বজায় রেখে শেখাচ্ছে সাম্যবাদ। সেদিনটায় সূর্যের আলো ছিল বলেই দিন ডেকেছিলাম, নয়ত তার হাতের রেখায় যখন আমার রেখা মিলল না, তখন হঠাৎ অন্ধকার করে এলো আকাশ, তারারা অনেকদুরে টিমটিমে আলোয় মলম দিচ্ছিল। আমাদের বাড়ির পাশে যে মেয়েটা এক রাতে অনেকদূরে তারা হয়ে গেছিল, সেই মেয়েটার স্বপ্নটা অনেক বড় ছিল কি? নাকি চোখে পড়ার মত ছিল না বলেই আলোর ফুলকি হয়ে যেতে হল কে জানে! তাকে দেখেছি অনেকবার তারা হয়ে আলো তো দিচ্ছে সবাইকেই! যে মেয়েটার দাদু বলেছিল 'ওই দেখ, তোমার বাবা', সে মেয়েটা আজও খুঁজতে খুঁজতে আকাশের দিকে তাকালে ভেতরের ঘর থেকে মা ডাকে 'দীপা, বাবার ফটোটা পরিস্কার করে কালকের শুকনো মালাটা সরিয়ে নতুনটা দে...' - বাবাকে একবার ছোঁয়া যায়। তারাগুলো নানা রকমের মুখোশ পরে আমাদের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। কখনও তো এত দূর মনে হয়নি দূরত্বে থেকেও। দূরত্ব বোধ হয় স্কেলে না ; মনেই কমবেশী হয়। এখন যাদের মুখের উপর তারাদের আলোর ভাষা প্রাগৈতিহাসিক লিপির মত ছড়িয়ে আছে, তাদের ছুঁয়ে আছে ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যময়তা। তারাদের নাম প্রিয়, সবারই এক নাম – কোন এক প্রিয়তম কেউ ওখানেই যে থাকে। যদি কোনদিন হাত ধরাধরি করে তারাখসা দেখে কেউ কিছু চেয়ে বসে, ব্যথা লাগে – ক্ষয়িষ্ণুতা তো কখনও ইচ্ছাপূরক হতে পারে না। তারাদের মাঝে আমরা ; নাকি আমাদের মাঝে তারারা, কখনও ভাবিনি, তবে যখনই কাছাকাছি থেকেছি আমরা, শিখেছি আলোর মত। তখনই অক্ষরে অক্ষরে ঠোকাঠুকি লেগে হয়ে যায় –
নিঃশব্দের আলখাল্লা গায়ে ওই যে লন্ঠন ভাসে;
তার নীচে কি আশ্চর্য – দেখছি আশ্চর্য হরেক আর
ধারাপাত পার হতে হতে ঘুম এলে তোমাদের শুকরিয়া।
দেখার অনেক কিছু ফেলে রেখে যদি শাশ্বত
চিনে নিয়ে ভালবাসি, তবে পৃথিবী গোরস্থান।
ভেসে আছে আলো আশীর্বাদ –
বুকে মেখে নিয়ে উজ্জ্বল হয়ে গেছে যারা
তাদের সেলাম। উঠোন-আঁচল পেতেছি,
চুপ তোমাদের কাছে আঁকা শিখে আমিও
জ্বলতে শিখি – চোখ ভালবাসি যারা দেখে।
অনেকদিন পর রাতের মত রাত পেলাম - ঠিক যেমন রাত হওয়া উচিৎ - ঐতিহাসিক তারা, ছেলেভোলানো চাঁদ আর কবির উর্বর ক্ষেতি - কালো অথচ অর্থপূর্ণ আকাশ। তারা আর আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে বিনিময় করছি সৌন্দর্য, স্মৃতি আর বিষাদ। তারাদের সাথে আমাদের মিল পাই যখন সেও হারায় মেঘের আড়ালে। হাল্কা নীলাভ আভা পরিমাণমত ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের উপর - চুম্বনরত প্রেমিক-প্রেমিকাদ্বয়ের উপর, ষ্টেশনমাস্টারের অন্ধ ফ্ল্যাগের উপর, মায়ের ব্যস্ততামাখা উলকাঁটার উপর, নোংরা ছেলেটার প্রশ্নময় ঘায়ের উপর...আরও অনেকের উপর সমতা বজায় রেখে শেখাচ্ছে সাম্যবাদ। সেদিনটায় সূর্যের আলো ছিল বলেই দিন ডেকেছিলাম, নয়ত তার হাতের রেখায় যখন আমার রেখা মিলল না, তখন হঠাৎ অন্ধকার করে এলো আকাশ, তারারা অনেকদুরে টিমটিমে আলোয় মলম দিচ্ছিল। আমাদের বাড়ির পাশে যে মেয়েটা এক রাতে অনেকদূরে তারা হয়ে গেছিল, সেই মেয়েটার স্বপ্নটা অনেক বড় ছিল কি? নাকি চোখে পড়ার মত ছিল না বলেই আলোর ফুলকি হয়ে যেতে হল কে জানে! তাকে দেখেছি অনেকবার তারা হয়ে আলো তো দিচ্ছে সবাইকেই! যে মেয়েটার দাদু বলেছিল 'ওই দেখ, তোমার বাবা', সে মেয়েটা আজও খুঁজতে খুঁজতে আকাশের দিকে তাকালে ভেতরের ঘর থেকে মা ডাকে 'দীপা, বাবার ফটোটা পরিস্কার করে কালকের শুকনো মালাটা সরিয়ে নতুনটা দে...' - বাবাকে একবার ছোঁয়া যায়। তারাগুলো নানা রকমের মুখোশ পরে আমাদের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। কখনও তো এত দূর মনে হয়নি দূরত্বে থেকেও। দূরত্ব বোধ হয় স্কেলে না ; মনেই কমবেশী হয়। এখন যাদের মুখের উপর তারাদের আলোর ভাষা প্রাগৈতিহাসিক লিপির মত ছড়িয়ে আছে, তাদের ছুঁয়ে আছে ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যময়তা। তারাদের নাম প্রিয়, সবারই এক নাম – কোন এক প্রিয়তম কেউ ওখানেই যে থাকে। যদি কোনদিন হাত ধরাধরি করে তারাখসা দেখে কেউ কিছু চেয়ে বসে, ব্যথা লাগে – ক্ষয়িষ্ণুতা তো কখনও ইচ্ছাপূরক হতে পারে না। তারাদের মাঝে আমরা ; নাকি আমাদের মাঝে তারারা, কখনও ভাবিনি, তবে যখনই কাছাকাছি থেকেছি আমরা, শিখেছি আলোর মত। তখনই অক্ষরে অক্ষরে ঠোকাঠুকি লেগে হয়ে যায় –
নিঃশব্দের আলখাল্লা গায়ে ওই যে লন্ঠন ভাসে;
তার নীচে কি আশ্চর্য – দেখছি আশ্চর্য হরেক আর
ধারাপাত পার হতে হতে ঘুম এলে তোমাদের শুকরিয়া।
দেখার অনেক কিছু ফেলে রেখে যদি শাশ্বত
চিনে নিয়ে ভালবাসি, তবে পৃথিবী গোরস্থান।
ভেসে আছে আলো আশীর্বাদ –
বুকে মেখে নিয়ে উজ্জ্বল হয়ে গেছে যারা
তাদের সেলাম। উঠোন-আঁচল পেতেছি,
চুপ তোমাদের কাছে আঁকা শিখে আমিও
জ্বলতে শিখি – চোখ ভালবাসি যারা দেখে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন