২৯ জানু, ২০১৪

সুরজিৎ চক্রবত্তী

বেঁচে থাকা
সুরজিৎ চক্রবত্তী



আয়নার সামনে দাঁড়ালে
আজকাল কেমন পাথর পাথর লাগে
মোটা ঠোঁট, থ্যাবড়া নাক, ক্লান্ত চোখ,
অজস্র বলিরেখামুখ ভরা পাথর নাকি পাথরের মুখ।


অসহিষ্ণুরা জুটেছে একসাথে –
কাল মন্দির হবে পবিত্র স্থানে
আজ তাই প্রদিপের আগুনে আলু পোড়াচ্ছে
লাল, নীল, সবুজ আর অবিশ্বাসীদেরও,
এরপর শনি মঙ্গলবারের পুজা অথবা পিরের সিন্নি
কেমন পাথর পাথর লাগে।


দুটো খারাপের মধ্যে
কম খারাপটাকেই তো বেছেছিলাম আমি
কিন্তু খেলাটা হল বাইনারি মেথডে
একঘেয়ে ক্লান্তিহীন একটানা ঝিঁঝিঁর ডাকের মত শূন্য
আর এক, এক আর শূন্যশূন্য আর এক, এক আর শূন্য............
কেমন পাথর পাথর লাগে।


দশটা মুখ থাকলে সহজ নিয়মে
কুড়িটা চোখতার কিছু বন্ধ আর কিছু অন্ধ,
লন্ডন তৈরির নব্বই ভাগ শেষখালি
কিছু বর্ষার বেয়াড়া জল ফুটপাত পেরিয়ে
খাটের উপর উঠে পড়তে চায়
চোখের কোনে জল আর জল জমতে জমতে পাথর।


রাস্তার মোড়ে মোড়ে নিয়নের বিজ্ঞাপণ,
টিভি ক্যামেরার দাপাদাপি নিভুর্ল জানাচ্ছে
নিরন্তর ভোট চুক্তির জন্য পেট চুক্তি
নেতারা বলেছেন “ দশ টাকায় ভরপেট খাওয়া যায় আজও ...... ”
নেতাদের মুখ ভরা পাথর।


কেউ যদি বলত মন খারাপ ভাবতাম মুড অফ্,
এক আকাশ তারা কে সাক্ষী
রেখে কতো নাজির উজির মেরেছি,
পূর্নিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটি বলে মনে হয় নি কখনোআমার
শিরদাঁড়া দিয়ে কর্কটক্রান্তির ঋজুতা
“ ইনক্লাব জিন্দাবাদ, লেলিনের পথ ই আমার পথ ......... “


বর্ষার গা ঘেঁসে রদ্দুর দাঁড়িয়ে থাকে তখনও।
তোমাকে পাওয়ার জন্য ভাল হতে পারিনি
তোমাকে পাওয়ার পর ভাল হতে পারতাম
তোমার দেওয়া কথা গুলোও বিলিয়ে দিয়েছি বোবাদের মধ্যে ...


তারপর এল তুষার ঝরার দিন –
সাদা সাদা থোকা থোকা বরফে ঢেকে গেল
গাছপালা, ঘরবাড়ি সমেত আমার পুরো পৃথিবীটাই।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে
সেদিন প্রথম দেখলাম বরফ জমে জমে পাথর .....


সেই থেকে পাথর চোখ, পাথর নাক, পাথর ঠোঁঠ এমন কি ......
দিব্বি বেঁচে আছি আমি ।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন