অথ অরুন্ধতী কথা
অমলেন্দু চন্দ্
স্পেসের সীমানায় পৌছতে চেয়ে সাগরবাবু ঠিক করতে পারলেন না আকাশ সসীম না অসীম, অনন্ত না শান্ত, আইনস্টাইনের ভাষায় পসিটিভ না নেগেটিভ, অঙ্কের ভাষায় প্যারাবোলা না হাইপারবোলা। আইনস্টাইন নিরুত্তর, সত্যেন বাবুও একেবারে চুপ, স্পেসের কারভেচার যখন শেষতক মাপাই গেলনা, তখন শেষমেশ ওম ভুর্ভুবস্বহ তত্স্ববিতুর বরেন্যীয়ম...নিয়ে মাতলেন, সেইন্ট পলস এর গির্জায় হিম্ন গেয়ে কাঁদলেন, তিপু সুলতান মসজিদের চাতালে শুক্রবার দুপুরের রোদে জ্বলতে জ্বলতে মাথায় khimar বেঁধে আকাশের দিকে দু হাত তুলে ভিজলেন প্রাণের আহ্লাদে মাইকে তখন নামাজের সুর তরঙ্গায়িত| দক্ষিণেশ্বরের নাটমন্দিরের দালানে অমাবস্যার রাত্তিরে একা বসে গুণ গুণ করে গাইলেন - মরণ রে তুঁহু মম।
সে রাত্তিরে নাকি এক রক্ত বস্ত্র পরিহিতা ভৈরবীও তাঁর ত্রিশূল হাতে সারারাত গঙ্গার দিকে তাকিয়ে চুপচাপ বসে ছিল। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম - সাগরবাবু, কিরকম লাগছিল? কিছুক্ষণ চোখ বুজে থেকে উত্তর এসেছিল - মরণ যেন বড় কাছাকাছি এসে বসেছিল রাতভর, মরণ রে.... বুঝেছিলাম, সাগরবাবু রামকৃষ্ণে মিশেছিলেন সে রাতে। ওই নাটমন্দিরের দালানেই তো রামকৃষ্ণ ভৈরবী সাধনা আর পূজা করেছিলেন সবার চোখের সামনে, আর সাগরবাবুকে দেখেছে সে রাতে শুধু গঙ্গার আকাশ আর ভৈরবীর চওড়া চাহনি। সাগরবাবু সুদর্শন। সাগরবাবু বিত্তবান, পিতৃপুরুষের ছেড়ে যাওয়া মাছের ভেড়ি আর ট্রাকের ব্যাবসা। তাঁর ঢাকাই জামদানি বা মসৃণ টাঙ্গাইলে অভ্যস্তা স্ত্রী উল্টো পাল্টা কিছু নিয়ে না মাতলেই হল এই ভাবেন আর শান্তিতে থাকেন।
তাঁর এক দেবর নাকি ওরকম সন্ধান টন্ধানে মেতে শেষতক দক্ষিন মেরু টেরু না কোথায় যেন ঠেক খেয়ে গিয়ে আজকাল সেখানকার কোকাট পল্লিতে শ্যেন দৃষ্টিতে খেয়াল রাখে সেস্থানের স্বল্পবয়সীনীরা অরাদেক্সন এর ইঞ্জেক্সান নিয়মিত নিচ্ছে কি না যেটা গাই গরুকে মোটাসোটা রাখার স্টেরয়েড। কোকাট পল্লির স্তম্ভিনিদের মোটাসোটা না রাখলে খদ্দের দের ভিড় তারা সামলাবে কি করে।দেবরটি পেশায় ডাক্তার ছিলেন, এখনো ডাক্তারিই করে চলেছেন এক ভিন্ন মাত্রায়। দেবরানী বিয়ের আগে ছিলেন ধনীর আদরিনী, এখন পরিত্যক্তা কষ্টচারিণী, সিঁথিতে সিঁদুর অনেকদিনই দেননা, কিন্তু কোন কোন দিন মধ্যরাতে তাঁর জানলার বাইরের বকুল গাছের পাখিগুলোর ঘুম ভেঙ্গে যায় - কেউ ফুঁপিয়ে কাঁদে। কোন সন্তান নেই দেবরানীর, বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ডাক্তার ঘর ছেড়েছিল, দেবরানীর রূপের আগুন ছিল তখন পুবাকাশে। কেন যে ডাক্তার ঘর ছেড়েছিল তাঁর অনেকটাই আজও রহস্য। আগুন নিভে গেছে, আলোর আভাষ আজও আছে। জ্বালা হয়েছিল আলো ... সূর্য নয় চন্দ্র নয় রূপের আগুনে, তারপর ... জ্বলেছিল চিতা - স্বপ্নের ঝরা পাতা ধিকি ধিকি আজও জ্বলে ... বুকে নিয়ে সমাধির শীতল পাথর।
মেহেদি রাঙানো দু হাত তুলে স্বপ্নের কিংখাবের ভেতর অরুন্ধতী বাঁচতে চেয়েছিল,সে কিংখাবে মাখানো বিষ জ্বালিয়ে দিল তার উদযাপন। যদি কল্পিত সুখের ছায়াতেই নক্শীকাঁথার বুনট মাখা গালিচা বেছান যেত তাহলে সবার সুখের ইস্টিকুটুম আতাগাছে বাসা বাধত আর বলত সই কই সই আর স্বপ্নেরা কুটুম হয়ে দেদার আসত ঘরে। এখন কষ্টনদীর বুকে দাঁড় বাওয়ার অবসাদ কেবল গভীর রাতে কান্নার ছলাত ছল আর সতর্ক বাতাস দমবন্ধ বুকে ধরে রাখে, বেশী দূরে যেতে দেয় না সে আওয়াজ, শুধু জানালার ওধারে পাকুড় ডালের পাখিরাই শোনে। গাঢ় তমিশ্রার মত আবিল আঁধারের জটিল জিহ্বায় সে কান্নার স্বর নিঃসাড়ে অরুর বালিশ তৈলাক্ত করে।
কি অদ্ভুত ঐতিহ্য এদেশের পুলোমারা পতিতা হয়। তাদের কান্নার বসুধারা পেরিয়ে কেউ মন্ত্র পড়েনা - মধুবাতা ঋতায়তে মধুক্ষরন্তি সিন্ধব - বাতাস মধুময় হোক, সব নদীরা মধুময় হোক। শুধু আগুন সাক্ষী থাকে সে কান্নার কারনের আর কেউ কেউ রাখে খবর। এক সন্ধ্যায় চায়ের টেবিলে সাগরবাবুর ঢাকাই জামদানী পরিহিতা অর্ধাঙ্গিনী - আদপে সাগরবাবুই তার অর্ধাঙ্গ মানে সাইজে আধা, তো সেই অঙ্গিনী সাগরবাবুর পরিবার চা ঢালতে ঢালতে বললেন - জান কাল রাতেও অরুন্ধতী কাঁদছিল ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। কাগজটা মুখের ওপর থেকে একটু নেমেছিল, যেন একটা নিরুচ্চার নজর বলছে - এখনো! কেন ... আর কত নোনাপানির স্বাদ নেবে মেয়েটা...কাগজ আবার নিশ্চুপ মুখ ঢেকেছিল।
অরুন্ধতী সাগরবাবুর ভাইয়ের বউ, যাকে ঘরে রেখে সাগরবাবুর ভাই আজ চোদ্দ বছর দেশান্তরি। স্পেসের কারভেচার মনে মনে মাপতে গিয়ে অঙ্কে মেলেনি, জীবনের অঙ্কেও তাই সাগরবাবু কোনদিন সেটা মেলাতে পারেন নি। বোধহয় সে অঙ্কে ভাইয়ের দেশান্তরী হওয়ার দায়ভাগ অরুন্ধতীর ভাগে কিছুটা হলেও বর্তেছে। অন্তত সাগর জায়া তাই ভাবেন যে বেচারি অরুন্ধতী জানলই না যে সাগরবাবুর আদালতে তার বিচার হয়ে গেছে - দোষী। কলমের ভাঙা নিব টা বুঝি মাঝে মাঝে অরুন্ধতী দেখতে পায় যখন এক আধদিন রবিবারের সকালে চায়ের টেবিলে দিদিভাইয়ের ডাকে এসে বসে আর সাগরবাবু সারাক্ষণ কাগজের আড়াল থেকে দু এক টুকরো কথা ছুঁড়ে দেন।
তবু মাঝে মাঝে সাগরবাবুর চওড়া চাহনি যেন কিছু আভাষ দিতে গিয়েও থমকে থাকে , যেন কোন লজ্জাবোধ না কি কোন কিছুর জন্য নিশ্চুপে দোয়া মাগে আর সেটাও পুরো হয় না কি এক যন্ত্রনার আভাষে। তার ঘরণী টের পায় না। শুধু সেই সব সময়ে কাগজের ওপর ঝুকে পড়তে থাকা চোখ বা কপালটার দিকে অরুন্ধতীর বোবা চাউনি যেন কি বলে ওঠে, সাগরবাবু দেখেন না আর ঘরণী টের পায় না, শুধু একদিন জিজ্ঞেস করেছিলেন - কি রে অরু? নিরুত্তর অরু'র চোখে তৎক্ষনাত সেই বোবা চাউনির ফিরে আসা - দেখে ঘরণী আর কথা বাড়ান নি। খারাপ লাগলেও অরুর কান্না যে এ বাড়িতে জীর্ণ বস্ত্র তুল্য নষ্ট বিবর্ণ বাতিল তাস, হোক না অরু সেই তাসের দেশের রানি।
পনেরো বছর আগে বিয়ের রাতে দেবরূপ সব সারা হয়ে গেলে - মানে বিয়ের রসম রিওয়াজ শেষ হয়ে গিয়ে যখন দুজনে কাছাকাছি পাশাপাশি বসে সে রাতের নায়ক নায়িকা, চুপি চুপি অরুন্ধতীকে শুধিয়েছিল - যদি জানতে পাও আমার অনেক - না না - ভীষণ কিছু অসামর্থের কিছু দুর্বলতার কথা - তুমি কি ভাববে তখন। বয়স তখন মনের ভরা ষোল - দুজনেরই - ডাক্তার পাশ করেছে বছর চারেক আগে, আটাশ নাকি উনত্রিশ, আর অরুন্ধতী তো সবে ইউনিভারসিটি সেরে ডক্টরেট শুরু করেছে - তাও আবার সাহিত্যে! সেই চর্চার সুবাদে স্বপ্নের তুঁষে আগুন ধরিয়ে নিরুপাক্ষ কল্পনার ভুট্টা পুড়িয়ে সদ্য সীমন্তিনীর নুন লঙ্কার মাখামাখি ফ্যান্টাসির বুনো আহ্লাদে বাকসিদ্ধা হয়েছিল অরু - ধনবানের আদরিনী যাকে রূপ তো দিয়েইছিল তার বংশের জীন আর গুনবতী করে তোলায় বাপ মা কাকা জ্যাঠার কোন ত্রুটি ছিল না, বলেছিল - আমি অরুন্ধতী, তোমার যে দুর্বলতা বা অসামর্থ্যই থাক তোমাকেই প্রদক্ষিণ করে যাবো। ভেবছিল অসামর্থ আর দুর্বলতা - হাহ, পসার জমে নি আর একটু আধটু নার্সদের সঙ্গে ইয়ে টিয়ের কথা বলছে হয়ত। দেবরুপ সাগরবাবুর চাইতেও সুদর্শন সুপুরুষ, তায় আবার ডাক্তার - দুর্বলতা না থাকলে পুরুষ মানুষ মানায় নাকি তায় আবার এরকম অনেক মেয়ের হিংসে ধরানর মত স্বামী হয়েছে। গরবিনী আদরিনী অরু মজেছিল রূপের প্রেমে।
রূপের জ্বালানি যে আংরাও হয়ে সব সমস্ত কালো করে আলোবাতাসহীন শব্দগন্ধ হীন উদভ্রান্তি হয়ে যেতে পারে - অরু'র সযত্ন সক্ষম লালনে পালিত সৌন্দর্য যৌনতা বিদ্যে বুদ্ধি চতুরতা বা কোন বশীকরন মন্ত্রের তীব্রতা সে অজুত নির্জন বিভ্রান্তির প্যারাবোলা মাপতে পারে নি।
কালরাত্রিতেই শুরু স্বপ্নপোকার হামাগুড়ি। তারপর তো কাঁচপোকা টিপের হাতছানি, শরীরের গাছে শুঁয়োপোকা যখন তখন শির শির,। , ফলে ইমিউন এন্দোক্রাইন আর কারডিও ভাস্কুলার সিস্টেমের যখন তখন এক্সারসাইজ শুধু রাত বিরেতে নয়, দিনেমানেও দেখা হলেই, বরারোহা লাস্যের কপট কুহকী - না কপট নয়, অকপট, জঘনের সতীপিঠে পেয়াস বহুত হ্যায় বরষাতি মাতম ছায়ে - অভীপ্সু পিপাসার অহিচ্ছত্র ধরে সঘন জঘন খোঁজা বারে বারে ।
রূপ ছুঁয়ে দেখত সেই হাতির দাঁতের মত গ্রীবা আর মুখ ডোবাত র্যাভেন পাখির মত ঘন কালো আর লম্বা চুলে, অরুন্ধতীর বাদামি চোখ, সে ভ্রু পল্লবে ডাক দিলে রূপ হিতাহিত জ্ঞ্যান হারাত দীঘল সেই শরীরের বাঁকে, প্রমাণকালভবেভয়ো রত অবস্থাপনম - ফলশ্রুতি অরুন্ধতী টক খেতে আরম্ভ করল। ভ্রুপল্লবের বালিয়াড়িতে হাঁসেদের চৈ চৈ তখন অন্য রূপ অন্য স্বাদ নিয়ে ভাসতে শুরু করেছে জৈবিক নিয়মে। শরীরের মধ্যে মন যদি কোথাও প্রত্যক্ষ বাস করে তো সে মানুষের চোখে। রূপ সে চোখের ভাষায় সেই আকুল আহ্বান খুঁজে পাচ্ছিল না, আর ওদিকে চপলা হরিণী দিনে দিনে গজেন্দ্র গামিনী হয়ে ওঠায় ডাক্তারিতেই রূপ মন দিচ্ছিল বেশী করে। একদিন দুপুরে রূপ অরুর দুধের গেলাসে দুটো ট্যাবলেট ফেলে দিয়েছিল। খেয়ে ভয়ঙ্কর ঘুমের মধ্যে অরু টের পেয়েছিল আবছা রূপ তার হাতে একটা আই ভি ইঞ্জেক্সান দিচ্ছে। ঘরটাও অচেনা - ভিন্ন গন্ধে ভরা। সাড়া শরীরে অসম্ভব ব্যাথা নিয়ে জ্ঞ্যান ফিরতে অরু টের পেয়েছিল সে নারসিং হোমে - রুপের নারসিং হোম। নার্সের কাছে আর পরে রুপের মুখে জানতে পারে ওর ঘুমের মধ্যে ব্লিডিং আরম্ভ হয়েছিল, তাই ওকে সেভ করতে গিয়ে বাচ্চাটাকে ...
ধুসর রংধনুর মত ফ্যাকাশে অরুন্ধতী হঠাৎ যেন টের পেয়েছিল যে পরিমণ্ডলে তারা হয়ে প্রদক্ষিনের স্বপ্ন সে দেখেছিল সেটা আসলে মহাশুন্য - জাগতিক ত্রিশঙ্কু অবস্থা মহাজাগতিক নিয়মের বাইরে। হৃদপিণ্ডের কম্পাঙ্কের গ্রাফ একটা অশালীন ভয়ের হাঁয়ের মধ্যে দিয়ে ঠিকরে উঠে গেছিল আর শামুকের প্রকৌশলে সে গুটিয়ে গেছিল নিজের মধ্যে। কোথায় গেল তার সেই কিশোরীর ফ্রক ওড়ানো হাওয়াবাতাসের মত উল্লাসের উচ্ছাস। স্থিতিস্থাপকতার পেন্ডুলাম হঠাৎ অস্থিতির ক্যারাভ্যানে উঠে রওয়ানা দিল অনভিপ্রেত যাত্রায়।
সেদিনও অদ্ভুত লেগেছিল অরুন্ধতীর - সাগরবাবুর নিরুচ্চার নজর। বোবা সে চাউনির অ্যাক্রিলিক জোছনায় কি করে ভিজতে হয় সে রহস্য অরু'র আজও অজানা। ও শুধু আভাষ পেত চশমার কাঁচ-ঘরের ভেতরে আটকে যাওয়া কথাগুলোর গায়ে সানসেটের আলো নির্বাক বালিহাঁসের মত ডানা ঝাড়তে ঝাড়তে উড়ে যাচ্ছে। কি রয়ে গেছে অজানা মাঝে মাঝে ওই কুয়াশার গ্রিল ধরে ঝাঁকিয়ে নিয়ে বুঝে দেখবার ইচ্ছে হয়েছে অরু'র, কিন্তু সে ইচ্ছে গুলোও প্রসব বিহীন রয়ে গেছে শেষতক।
গাগর ছিল, লজ্জাবস্ত্র অঙ্গরাখা ছিল শুধু গলায় পেঁচিয়ে ডুবে মরার যমুনা ছিল না, তাই কলঙ্কিনী বিরহিণীর শিয়র ভেজার কান্না রোজ রাতে শুধু পাকুরের ডাল আর সে ডালে বসত করা পাখিরাই শুনে চুপ করে থেকে গেল। বেসুরের রাত জাগা ক্ষরনের অন্ধকারে ওই পাকুরের রাতজাগা পাখিগুলোও জেনে গেছে রোদলাগা সকালের লাল আর কোনদিন ওই জানলার অন্ধকার ভেঙে ফিরে আসবে না। সাগরবাবু চেয়েছিলেন, কিন্তু কোনোদিন মুখ ফুটে আট বছর কেটে যাওয়ার পরেও বলতে পারেন নি, শুধু চশ্মার কাঁচের আলো ঝিকিয়ে উঠে ছায়ামাখা হয়ে গেছে আর অরুও সে আভা দেখেও বোঝেনি বরদা ভাই কি বলতে চেয়ে নীরব থেকে গেলেন। পাঁশুটে জন্ডিস মার্কা অভাবী চাঁদের রক্তে বিলি রুবিনের ক্লেশ তাই সকালের রোদ চোখ মেরে চলে গেল অরুর জীবনে, দা ভাই নীরব রয়ে গেলেন, ভাই কে বড় ভালবাসতেন, তাই কোনোদিন অরু কে বলা হল না - কন্যে রে তুই এবারে গা আই অ্যাম ফ্রি ফ্রম ইউ অ্যাট লাস্ট, শুধু চশমার কাচে আলোর টুকরোগুলো পুড়ে পুড়ে আলো থেকে কালো রাত হয়ে নিবে গেল।
স্পেসের সীমানায় পৌছতে চেয়ে সাগরবাবু ঠিক করতে পারলেন না আকাশ সসীম না অসীম, অনন্ত না শান্ত, আইনস্টাইনের ভাষায় পসিটিভ না নেগেটিভ, অঙ্কের ভাষায় প্যারাবোলা না হাইপারবোলা। আইনস্টাইন নিরুত্তর, সত্যেন বাবুও একেবারে চুপ, স্পেসের কারভেচার যখন শেষতক মাপাই গেলনা, তখন শেষমেশ ওম ভুর্ভুবস্বহ তত্স্ববিতুর বরেন্যীয়ম...নিয়ে মাতলেন, সেইন্ট পলস এর গির্জায় হিম্ন গেয়ে কাঁদলেন, তিপু সুলতান মসজিদের চাতালে শুক্রবার দুপুরের রোদে জ্বলতে জ্বলতে মাথায় khimar বেঁধে আকাশের দিকে দু হাত তুলে ভিজলেন প্রাণের আহ্লাদে মাইকে তখন নামাজের সুর তরঙ্গায়িত| দক্ষিণেশ্বরের নাটমন্দিরের দালানে অমাবস্যার রাত্তিরে একা বসে গুণ গুণ করে গাইলেন - মরণ রে তুঁহু মম।
সে রাত্তিরে নাকি এক রক্ত বস্ত্র পরিহিতা ভৈরবীও তাঁর ত্রিশূল হাতে সারারাত গঙ্গার দিকে তাকিয়ে চুপচাপ বসে ছিল। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম - সাগরবাবু, কিরকম লাগছিল? কিছুক্ষণ চোখ বুজে থেকে উত্তর এসেছিল - মরণ যেন বড় কাছাকাছি এসে বসেছিল রাতভর, মরণ রে.... বুঝেছিলাম, সাগরবাবু রামকৃষ্ণে মিশেছিলেন সে রাতে। ওই নাটমন্দিরের দালানেই তো রামকৃষ্ণ ভৈরবী সাধনা আর পূজা করেছিলেন সবার চোখের সামনে, আর সাগরবাবুকে দেখেছে সে রাতে শুধু গঙ্গার আকাশ আর ভৈরবীর চওড়া চাহনি। সাগরবাবু সুদর্শন। সাগরবাবু বিত্তবান, পিতৃপুরুষের ছেড়ে যাওয়া মাছের ভেড়ি আর ট্রাকের ব্যাবসা। তাঁর ঢাকাই জামদানি বা মসৃণ টাঙ্গাইলে অভ্যস্তা স্ত্রী উল্টো পাল্টা কিছু নিয়ে না মাতলেই হল এই ভাবেন আর শান্তিতে থাকেন।
তাঁর এক দেবর নাকি ওরকম সন্ধান টন্ধানে মেতে শেষতক দক্ষিন মেরু টেরু না কোথায় যেন ঠেক খেয়ে গিয়ে আজকাল সেখানকার কোকাট পল্লিতে শ্যেন দৃষ্টিতে খেয়াল রাখে সেস্থানের স্বল্পবয়সীনীরা অরাদেক্সন এর ইঞ্জেক্সান নিয়মিত নিচ্ছে কি না যেটা গাই গরুকে মোটাসোটা রাখার স্টেরয়েড। কোকাট পল্লির স্তম্ভিনিদের মোটাসোটা না রাখলে খদ্দের দের ভিড় তারা সামলাবে কি করে।দেবরটি পেশায় ডাক্তার ছিলেন, এখনো ডাক্তারিই করে চলেছেন এক ভিন্ন মাত্রায়। দেবরানী বিয়ের আগে ছিলেন ধনীর আদরিনী, এখন পরিত্যক্তা কষ্টচারিণী, সিঁথিতে সিঁদুর অনেকদিনই দেননা, কিন্তু কোন কোন দিন মধ্যরাতে তাঁর জানলার বাইরের বকুল গাছের পাখিগুলোর ঘুম ভেঙ্গে যায় - কেউ ফুঁপিয়ে কাঁদে। কোন সন্তান নেই দেবরানীর, বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ডাক্তার ঘর ছেড়েছিল, দেবরানীর রূপের আগুন ছিল তখন পুবাকাশে। কেন যে ডাক্তার ঘর ছেড়েছিল তাঁর অনেকটাই আজও রহস্য। আগুন নিভে গেছে, আলোর আভাষ আজও আছে। জ্বালা হয়েছিল আলো ... সূর্য নয় চন্দ্র নয় রূপের আগুনে, তারপর ... জ্বলেছিল চিতা - স্বপ্নের ঝরা পাতা ধিকি ধিকি আজও জ্বলে ... বুকে নিয়ে সমাধির শীতল পাথর।
মেহেদি রাঙানো দু হাত তুলে স্বপ্নের কিংখাবের ভেতর অরুন্ধতী বাঁচতে চেয়েছিল,সে কিংখাবে মাখানো বিষ জ্বালিয়ে দিল তার উদযাপন। যদি কল্পিত সুখের ছায়াতেই নক্শীকাঁথার বুনট মাখা গালিচা বেছান যেত তাহলে সবার সুখের ইস্টিকুটুম আতাগাছে বাসা বাধত আর বলত সই কই সই আর স্বপ্নেরা কুটুম হয়ে দেদার আসত ঘরে। এখন কষ্টনদীর বুকে দাঁড় বাওয়ার অবসাদ কেবল গভীর রাতে কান্নার ছলাত ছল আর সতর্ক বাতাস দমবন্ধ বুকে ধরে রাখে, বেশী দূরে যেতে দেয় না সে আওয়াজ, শুধু জানালার ওধারে পাকুড় ডালের পাখিরাই শোনে। গাঢ় তমিশ্রার মত আবিল আঁধারের জটিল জিহ্বায় সে কান্নার স্বর নিঃসাড়ে অরুর বালিশ তৈলাক্ত করে।
কি অদ্ভুত ঐতিহ্য এদেশের পুলোমারা পতিতা হয়। তাদের কান্নার বসুধারা পেরিয়ে কেউ মন্ত্র পড়েনা - মধুবাতা ঋতায়তে মধুক্ষরন্তি সিন্ধব - বাতাস মধুময় হোক, সব নদীরা মধুময় হোক। শুধু আগুন সাক্ষী থাকে সে কান্নার কারনের আর কেউ কেউ রাখে খবর। এক সন্ধ্যায় চায়ের টেবিলে সাগরবাবুর ঢাকাই জামদানী পরিহিতা অর্ধাঙ্গিনী - আদপে সাগরবাবুই তার অর্ধাঙ্গ মানে সাইজে আধা, তো সেই অঙ্গিনী সাগরবাবুর পরিবার চা ঢালতে ঢালতে বললেন - জান কাল রাতেও অরুন্ধতী কাঁদছিল ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। কাগজটা মুখের ওপর থেকে একটু নেমেছিল, যেন একটা নিরুচ্চার নজর বলছে - এখনো! কেন ... আর কত নোনাপানির স্বাদ নেবে মেয়েটা...কাগজ আবার নিশ্চুপ মুখ ঢেকেছিল।
অরুন্ধতী সাগরবাবুর ভাইয়ের বউ, যাকে ঘরে রেখে সাগরবাবুর ভাই আজ চোদ্দ বছর দেশান্তরি। স্পেসের কারভেচার মনে মনে মাপতে গিয়ে অঙ্কে মেলেনি, জীবনের অঙ্কেও তাই সাগরবাবু কোনদিন সেটা মেলাতে পারেন নি। বোধহয় সে অঙ্কে ভাইয়ের দেশান্তরী হওয়ার দায়ভাগ অরুন্ধতীর ভাগে কিছুটা হলেও বর্তেছে। অন্তত সাগর জায়া তাই ভাবেন যে বেচারি অরুন্ধতী জানলই না যে সাগরবাবুর আদালতে তার বিচার হয়ে গেছে - দোষী। কলমের ভাঙা নিব টা বুঝি মাঝে মাঝে অরুন্ধতী দেখতে পায় যখন এক আধদিন রবিবারের সকালে চায়ের টেবিলে দিদিভাইয়ের ডাকে এসে বসে আর সাগরবাবু সারাক্ষণ কাগজের আড়াল থেকে দু এক টুকরো কথা ছুঁড়ে দেন।
তবু মাঝে মাঝে সাগরবাবুর চওড়া চাহনি যেন কিছু আভাষ দিতে গিয়েও থমকে থাকে , যেন কোন লজ্জাবোধ না কি কোন কিছুর জন্য নিশ্চুপে দোয়া মাগে আর সেটাও পুরো হয় না কি এক যন্ত্রনার আভাষে। তার ঘরণী টের পায় না। শুধু সেই সব সময়ে কাগজের ওপর ঝুকে পড়তে থাকা চোখ বা কপালটার দিকে অরুন্ধতীর বোবা চাউনি যেন কি বলে ওঠে, সাগরবাবু দেখেন না আর ঘরণী টের পায় না, শুধু একদিন জিজ্ঞেস করেছিলেন - কি রে অরু? নিরুত্তর অরু'র চোখে তৎক্ষনাত সেই বোবা চাউনির ফিরে আসা - দেখে ঘরণী আর কথা বাড়ান নি। খারাপ লাগলেও অরুর কান্না যে এ বাড়িতে জীর্ণ বস্ত্র তুল্য নষ্ট বিবর্ণ বাতিল তাস, হোক না অরু সেই তাসের দেশের রানি।
পনেরো বছর আগে বিয়ের রাতে দেবরূপ সব সারা হয়ে গেলে - মানে বিয়ের রসম রিওয়াজ শেষ হয়ে গিয়ে যখন দুজনে কাছাকাছি পাশাপাশি বসে সে রাতের নায়ক নায়িকা, চুপি চুপি অরুন্ধতীকে শুধিয়েছিল - যদি জানতে পাও আমার অনেক - না না - ভীষণ কিছু অসামর্থের কিছু দুর্বলতার কথা - তুমি কি ভাববে তখন। বয়স তখন মনের ভরা ষোল - দুজনেরই - ডাক্তার পাশ করেছে বছর চারেক আগে, আটাশ নাকি উনত্রিশ, আর অরুন্ধতী তো সবে ইউনিভারসিটি সেরে ডক্টরেট শুরু করেছে - তাও আবার সাহিত্যে! সেই চর্চার সুবাদে স্বপ্নের তুঁষে আগুন ধরিয়ে নিরুপাক্ষ কল্পনার ভুট্টা পুড়িয়ে সদ্য সীমন্তিনীর নুন লঙ্কার মাখামাখি ফ্যান্টাসির বুনো আহ্লাদে বাকসিদ্ধা হয়েছিল অরু - ধনবানের আদরিনী যাকে রূপ তো দিয়েইছিল তার বংশের জীন আর গুনবতী করে তোলায় বাপ মা কাকা জ্যাঠার কোন ত্রুটি ছিল না, বলেছিল - আমি অরুন্ধতী, তোমার যে দুর্বলতা বা অসামর্থ্যই থাক তোমাকেই প্রদক্ষিণ করে যাবো। ভেবছিল অসামর্থ আর দুর্বলতা - হাহ, পসার জমে নি আর একটু আধটু নার্সদের সঙ্গে ইয়ে টিয়ের কথা বলছে হয়ত। দেবরুপ সাগরবাবুর চাইতেও সুদর্শন সুপুরুষ, তায় আবার ডাক্তার - দুর্বলতা না থাকলে পুরুষ মানুষ মানায় নাকি তায় আবার এরকম অনেক মেয়ের হিংসে ধরানর মত স্বামী হয়েছে। গরবিনী আদরিনী অরু মজেছিল রূপের প্রেমে।
রূপের জ্বালানি যে আংরাও হয়ে সব সমস্ত কালো করে আলোবাতাসহীন শব্দগন্ধ হীন উদভ্রান্তি হয়ে যেতে পারে - অরু'র সযত্ন সক্ষম লালনে পালিত সৌন্দর্য যৌনতা বিদ্যে বুদ্ধি চতুরতা বা কোন বশীকরন মন্ত্রের তীব্রতা সে অজুত নির্জন বিভ্রান্তির প্যারাবোলা মাপতে পারে নি।
কালরাত্রিতেই শুরু স্বপ্নপোকার হামাগুড়ি। তারপর তো কাঁচপোকা টিপের হাতছানি, শরীরের গাছে শুঁয়োপোকা যখন তখন শির শির,। , ফলে ইমিউন এন্দোক্রাইন আর কারডিও ভাস্কুলার সিস্টেমের যখন তখন এক্সারসাইজ শুধু রাত বিরেতে নয়, দিনেমানেও দেখা হলেই, বরারোহা লাস্যের কপট কুহকী - না কপট নয়, অকপট, জঘনের সতীপিঠে পেয়াস বহুত হ্যায় বরষাতি মাতম ছায়ে - অভীপ্সু পিপাসার অহিচ্ছত্র ধরে সঘন জঘন খোঁজা বারে বারে ।
রূপ ছুঁয়ে দেখত সেই হাতির দাঁতের মত গ্রীবা আর মুখ ডোবাত র্যাভেন পাখির মত ঘন কালো আর লম্বা চুলে, অরুন্ধতীর বাদামি চোখ, সে ভ্রু পল্লবে ডাক দিলে রূপ হিতাহিত জ্ঞ্যান হারাত দীঘল সেই শরীরের বাঁকে, প্রমাণকালভবেভয়ো রত অবস্থাপনম - ফলশ্রুতি অরুন্ধতী টক খেতে আরম্ভ করল। ভ্রুপল্লবের বালিয়াড়িতে হাঁসেদের চৈ চৈ তখন অন্য রূপ অন্য স্বাদ নিয়ে ভাসতে শুরু করেছে জৈবিক নিয়মে। শরীরের মধ্যে মন যদি কোথাও প্রত্যক্ষ বাস করে তো সে মানুষের চোখে। রূপ সে চোখের ভাষায় সেই আকুল আহ্বান খুঁজে পাচ্ছিল না, আর ওদিকে চপলা হরিণী দিনে দিনে গজেন্দ্র গামিনী হয়ে ওঠায় ডাক্তারিতেই রূপ মন দিচ্ছিল বেশী করে। একদিন দুপুরে রূপ অরুর দুধের গেলাসে দুটো ট্যাবলেট ফেলে দিয়েছিল। খেয়ে ভয়ঙ্কর ঘুমের মধ্যে অরু টের পেয়েছিল আবছা রূপ তার হাতে একটা আই ভি ইঞ্জেক্সান দিচ্ছে। ঘরটাও অচেনা - ভিন্ন গন্ধে ভরা। সাড়া শরীরে অসম্ভব ব্যাথা নিয়ে জ্ঞ্যান ফিরতে অরু টের পেয়েছিল সে নারসিং হোমে - রুপের নারসিং হোম। নার্সের কাছে আর পরে রুপের মুখে জানতে পারে ওর ঘুমের মধ্যে ব্লিডিং আরম্ভ হয়েছিল, তাই ওকে সেভ করতে গিয়ে বাচ্চাটাকে ...
ধুসর রংধনুর মত ফ্যাকাশে অরুন্ধতী হঠাৎ যেন টের পেয়েছিল যে পরিমণ্ডলে তারা হয়ে প্রদক্ষিনের স্বপ্ন সে দেখেছিল সেটা আসলে মহাশুন্য - জাগতিক ত্রিশঙ্কু অবস্থা মহাজাগতিক নিয়মের বাইরে। হৃদপিণ্ডের কম্পাঙ্কের গ্রাফ একটা অশালীন ভয়ের হাঁয়ের মধ্যে দিয়ে ঠিকরে উঠে গেছিল আর শামুকের প্রকৌশলে সে গুটিয়ে গেছিল নিজের মধ্যে। কোথায় গেল তার সেই কিশোরীর ফ্রক ওড়ানো হাওয়াবাতাসের মত উল্লাসের উচ্ছাস। স্থিতিস্থাপকতার পেন্ডুলাম হঠাৎ অস্থিতির ক্যারাভ্যানে উঠে রওয়ানা দিল অনভিপ্রেত যাত্রায়।
সেদিনও অদ্ভুত লেগেছিল অরুন্ধতীর - সাগরবাবুর নিরুচ্চার নজর। বোবা সে চাউনির অ্যাক্রিলিক জোছনায় কি করে ভিজতে হয় সে রহস্য অরু'র আজও অজানা। ও শুধু আভাষ পেত চশমার কাঁচ-ঘরের ভেতরে আটকে যাওয়া কথাগুলোর গায়ে সানসেটের আলো নির্বাক বালিহাঁসের মত ডানা ঝাড়তে ঝাড়তে উড়ে যাচ্ছে। কি রয়ে গেছে অজানা মাঝে মাঝে ওই কুয়াশার গ্রিল ধরে ঝাঁকিয়ে নিয়ে বুঝে দেখবার ইচ্ছে হয়েছে অরু'র, কিন্তু সে ইচ্ছে গুলোও প্রসব বিহীন রয়ে গেছে শেষতক।
গাগর ছিল, লজ্জাবস্ত্র অঙ্গরাখা ছিল শুধু গলায় পেঁচিয়ে ডুবে মরার যমুনা ছিল না, তাই কলঙ্কিনী বিরহিণীর শিয়র ভেজার কান্না রোজ রাতে শুধু পাকুরের ডাল আর সে ডালে বসত করা পাখিরাই শুনে চুপ করে থেকে গেল। বেসুরের রাত জাগা ক্ষরনের অন্ধকারে ওই পাকুরের রাতজাগা পাখিগুলোও জেনে গেছে রোদলাগা সকালের লাল আর কোনদিন ওই জানলার অন্ধকার ভেঙে ফিরে আসবে না। সাগরবাবু চেয়েছিলেন, কিন্তু কোনোদিন মুখ ফুটে আট বছর কেটে যাওয়ার পরেও বলতে পারেন নি, শুধু চশ্মার কাঁচের আলো ঝিকিয়ে উঠে ছায়ামাখা হয়ে গেছে আর অরুও সে আভা দেখেও বোঝেনি বরদা ভাই কি বলতে চেয়ে নীরব থেকে গেলেন। পাঁশুটে জন্ডিস মার্কা অভাবী চাঁদের রক্তে বিলি রুবিনের ক্লেশ তাই সকালের রোদ চোখ মেরে চলে গেল অরুর জীবনে, দা ভাই নীরব রয়ে গেলেন, ভাই কে বড় ভালবাসতেন, তাই কোনোদিন অরু কে বলা হল না - কন্যে রে তুই এবারে গা আই অ্যাম ফ্রি ফ্রম ইউ অ্যাট লাস্ট, শুধু চশমার কাচে আলোর টুকরোগুলো পুড়ে পুড়ে আলো থেকে কালো রাত হয়ে নিবে গেল।
1 কমেন্টস্:
অথ অরুন্ধতী কথা..মন ছুঁয়ে গেল...বিষণ্ণ করে গেল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন