আমি ও আমার চৌমাথা
তুষ্টি ভট্টাচার্য
চৌমাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম , ট্র্যাফিক সিগনালের ইশারায় । ইশারার লাল বাতি এক চোখে স্থির তখন । আমার অপেক্ষা ছিল চোখ মটকানো সবুজের , নিদেনপক্ষে ম্যাটমেটে হলুদ হলেও কাজ চলে যেত । জেব্রা ক্রশিং-এর এপার থেকে দেখছিলাম ওপারের দূরত্ব । আমার ডান দিক , বাঁ দিক ও সামনে-পিছনে যে রাস্তা দেখা যাচ্ছিল কিম্বা যাচ্ছিল না , আমি পায়চারী করছিলাম সেখানে । হাঁটতে হাঁটতে, আসলে কোথাও পৌঁছনোর তাড়া ছিল না বলে , এক একবার থামছি আর লম্বা শ্বাস টানছি । আমার বুকের ভেতর , পাঁজরের খাঁজে খাঁজে একরাশ কার্বন জমা হচ্ছে । এই কার্বন থেকে হীরে তৈরি করব ভেবে রেখেছি । কোন তাড়া নেই এ ক্ষেত্রেও , জমতে থাকুক কার্বন ধীরে ধীরে । অনেক পায়চারী হল , এবার বরং যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম , সেখানেই ফিরে যাওয়া যাক ।
ফিরতে গিয়ে এক দাড়িওলা বুড়োর সাথে দেখা হল । খনখনে গলায় সে আমাকে গান শোনাতে চাইছিল আপ্রাণ , আর আমিও কিছুতেই শুনব না বলে দৌড় লাগালাম । যখন থামলাম , দেখি আমার সামনে পিছনে , ডাইনে বাঁয়ে কোন রাস্তাই নেই আর । পথ হারালাম নাকি ? ভীষণ ভয়ে , ঘেমে নেয়ে উঠছি যখন , তখন দেখি এক দেবদূত বাঁশি বাজাতে বাজাতে আমার সামনে ! ওকে দেখে ভয় কাটানোর চেষ্টায় একটা হাসি ছুঁড়ে দিলাম । সে ওমনি বাঁশি বাজানো বন্ধ করে উধাও হয়ে গেল । চোখ রগড়ে ভালো করে তাকিয়ে দেখি , আমার চারদিকের রাস্তাগুলো ঠিকঠাক মতই রয়েছে । তাজ্জব ! এবার আর দৌড়োদৌড়ি নয় , ধীরে সুস্থে চোখ কান খোলা রেখে ফিরে এলাম নিজের জায়গায় ।
বসে পড়লাম ধপ করে মাটিতে । ক্লান্তিতে আমার হাত-পা ভেঙে আসছিল । এখন আর চলার শক্তি নেই আমার । স্থির লাল সিগনালটাও যেন দয়া করছে আমাকে । ও তেমনি স্থিরই রয়েছে । যে সবুজের চোখ মটকানো দেখতে চাইছিলাম , ছুটব বলে প্রস্তুত ছিলাম , এখন আর চাইছি না ওকে । মনে হচ্ছে এখানেই বসে থাকি অন্তহীন । কিন্তু বসে থাকব বললেই কি বসে থাকা যায় ? সবুজ আলো জ্বললেই আমাকে ঘাড় ধরে হটিয়ে দেবে ট্র্যাফিক পুলিশ । উঠতে আমাকে হবেই । হঠাৎ কোথা থেকে যেন ভিজে সোঁদা গন্ধ মেশানো এক ঝলক হাওয়া এলো ! নিশ্চই কোথাও বৃষ্টি হয়েছে । যেখানে বৃষ্টি হয়েছে , সেখানকার অনেকেই আজ ভিজেছে , জানি । আমার কাছে এই গনগনে রোদে এইটুকু ভিজে বাতাসই যথেষ্ট পাওনা । রাস্তার ধারে যেটুকু ফাঁকা জমি পড়ে আছে , সেদিকে চোখ পড়তেই দেখি কাশফুল ! বুড়ির চুলের মত কাশবন মাথা দোলাচ্ছে আনন্দে । এত আনন্দ কিসের ওদের ? সে কি শরৎকাল এসেছে বলে ?
চৌমাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম , ট্র্যাফিক সিগনালের ইশারায় । ইশারার লাল বাতি এক চোখে স্থির তখন । আমার অপেক্ষা ছিল চোখ মটকানো সবুজের , নিদেনপক্ষে ম্যাটমেটে হলুদ হলেও কাজ চলে যেত । জেব্রা ক্রশিং-এর এপার থেকে দেখছিলাম ওপারের দূরত্ব । আমার ডান দিক , বাঁ দিক ও সামনে-পিছনে যে রাস্তা দেখা যাচ্ছিল কিম্বা যাচ্ছিল না , আমি পায়চারী করছিলাম সেখানে । হাঁটতে হাঁটতে, আসলে কোথাও পৌঁছনোর তাড়া ছিল না বলে , এক একবার থামছি আর লম্বা শ্বাস টানছি । আমার বুকের ভেতর , পাঁজরের খাঁজে খাঁজে একরাশ কার্বন জমা হচ্ছে । এই কার্বন থেকে হীরে তৈরি করব ভেবে রেখেছি । কোন তাড়া নেই এ ক্ষেত্রেও , জমতে থাকুক কার্বন ধীরে ধীরে । অনেক পায়চারী হল , এবার বরং যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম , সেখানেই ফিরে যাওয়া যাক ।
ফিরতে গিয়ে এক দাড়িওলা বুড়োর সাথে দেখা হল । খনখনে গলায় সে আমাকে গান শোনাতে চাইছিল আপ্রাণ , আর আমিও কিছুতেই শুনব না বলে দৌড় লাগালাম । যখন থামলাম , দেখি আমার সামনে পিছনে , ডাইনে বাঁয়ে কোন রাস্তাই নেই আর । পথ হারালাম নাকি ? ভীষণ ভয়ে , ঘেমে নেয়ে উঠছি যখন , তখন দেখি এক দেবদূত বাঁশি বাজাতে বাজাতে আমার সামনে ! ওকে দেখে ভয় কাটানোর চেষ্টায় একটা হাসি ছুঁড়ে দিলাম । সে ওমনি বাঁশি বাজানো বন্ধ করে উধাও হয়ে গেল । চোখ রগড়ে ভালো করে তাকিয়ে দেখি , আমার চারদিকের রাস্তাগুলো ঠিকঠাক মতই রয়েছে । তাজ্জব ! এবার আর দৌড়োদৌড়ি নয় , ধীরে সুস্থে চোখ কান খোলা রেখে ফিরে এলাম নিজের জায়গায় ।
বসে পড়লাম ধপ করে মাটিতে । ক্লান্তিতে আমার হাত-পা ভেঙে আসছিল । এখন আর চলার শক্তি নেই আমার । স্থির লাল সিগনালটাও যেন দয়া করছে আমাকে । ও তেমনি স্থিরই রয়েছে । যে সবুজের চোখ মটকানো দেখতে চাইছিলাম , ছুটব বলে প্রস্তুত ছিলাম , এখন আর চাইছি না ওকে । মনে হচ্ছে এখানেই বসে থাকি অন্তহীন । কিন্তু বসে থাকব বললেই কি বসে থাকা যায় ? সবুজ আলো জ্বললেই আমাকে ঘাড় ধরে হটিয়ে দেবে ট্র্যাফিক পুলিশ । উঠতে আমাকে হবেই । হঠাৎ কোথা থেকে যেন ভিজে সোঁদা গন্ধ মেশানো এক ঝলক হাওয়া এলো ! নিশ্চই কোথাও বৃষ্টি হয়েছে । যেখানে বৃষ্টি হয়েছে , সেখানকার অনেকেই আজ ভিজেছে , জানি । আমার কাছে এই গনগনে রোদে এইটুকু ভিজে বাতাসই যথেষ্ট পাওনা । রাস্তার ধারে যেটুকু ফাঁকা জমি পড়ে আছে , সেদিকে চোখ পড়তেই দেখি কাশফুল ! বুড়ির চুলের মত কাশবন মাথা দোলাচ্ছে আনন্দে । এত আনন্দ কিসের ওদের ? সে কি শরৎকাল এসেছে বলে ?
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন