কৃষ্ণার মেঘদূত
রাজর্ষি ঘোষ
১
অহর্নিশি পুতুল খেলা।
হাত বাড়িয়ে দিলে যে আগুন...
বুঝেও, কৃষ্ণা আমাকে বোঝে নি।
সার সার চন্দনের গন্ধ।
তবু ধূপ পুড়ে আসে যে বিকেলে
স্নেহময় ছায়াময় আদরের মত
সে ঠোঁটে লেগে থাকে।
আমাদের রাস্তায় সাইকেলে
জ্যোৎস্না সওয়ারি।
ভুল হয় এলোচুলে।
আঙুলের ফাঁকে কারা যেন মেলে
ডানা,
আর চিলতে আলোয় লুকোচুরি
খেলে...
রাতঘুম তার বালিশে প্রবাসী।
হেমন্তের সিঁথির সিঁদুর
জেগে থাকে কৃষ্ণার কোলে
বিবশ সিঁদুর...
জন্মান্ধ তার ভালবাসা।
২
কৃষ্ণা চতুর্দশীর চাঁদ
দেখেছিল।
একফালি নখের মত... কিংবা
নৌকার মত
কিংবা সেই মানুষটির মত
যে আর কোনদিন কাছেও আসে নি।
যাকে গিলে খেল মোহনার নোনা
জল...
সন্ধ্যার অপর্যাপ্ত বাতাসে
সে ফিরে ফিরে আসে।
আমি আকাশ দেখেছি
তবু এমন কৃষ্ণা দেখিনি
কখনো...
লহমায় সে সমুদ্র ব্যাকুল
পুকুরের জলে ছায়া এসে পড়ে তার
হয়তো মন্থনে জেগে উঠবে
কোন ক্রোধ শতাব্দী-প্রাচীন -
তবু তার শরীর জাগে না;
মৃত চোখের কোলে বাষ্পেরা
ভিড় করে।
৩
বনলতা নয়
নয় সে হেমন্তের আগুন-পাখি
কৃষ্ণা
তাকে আমি বাঁধি নি কখনো।
সাঁঝতারাদের ভিড়ে
টুপটাপ ঝরে যাওয়া পাতাদের
মত
সে বাঁধন মানে নি।
বাঁধন মানে নি উজান তার
বিষণ্ণ বাহুডোরে।
অতএব সে ক্যামেলিয়া ছিল না
কোনদিন।
আমার সমস্ত কৃষ্ণা
ইচ্ছেগুলি দুরত্বে যোজন...
ভীতু ছায়া চুপ করে থাকে।
তারা খসে যায় তারাদের মত
হেসেখেলে।
নবান্নের ধান বা মরীচিকা উষ্ণ শরীর
পড়ে থাকে ছায়াপথ
মেঘদূত কৃষ্ণার চোখে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন