জন্মের দাগ
(পর্ব=১)
গড়িয়াহাটার মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে মনে মনেই বিড়বিড় করছিল মন্দিরা! অদ্ভুত সব কাজকারবার এদেশের! দরকার রাসবিহারী রোডের উপর উড়ালপুল! তৈরী হল গড়িয়াহাট রোডের উপরে! আশ্চর্য্য! অথচ বাইপাস মুখি ট্রাফিকের সংখ্যা ঢাকুরিয়া মুখির থেকে অনেক বেশি! কিন্তু কে কাকে বোঝাবে? সিগন্যাল পেয়ে যেতেই যে একসিলেটরে চাপ দেবে সে উপায়ও নেই! এত ব্যস্ত একটা মোড়ে সেটা সম্ভবও নয়! মানুষের ভিড়ে গাড়ির ভিড়ে রাস্তা ফাঁকা পাওয়াই দুস্কর! তারপর যত্রতত্র অটো! কখন একটু ধাক্কা লেগে যাবে, দোষ হবে চারচাকার! সামনের শাদা রঙের সুইফ্টটাকে ওভারটেক করতেই আবার ফোনটা বেজে উঠল! ডেস্ক থেকেই ফোন করেছে! পেশেন্টের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে!
গতকালই গুরুতর আহত হয়ে এমার্জেন্সিতে ভর্ত্তি হয় একজন! মোটর সাইকেল একসিডেন্টে! মাথায় হেলমেট ছিল, তবুও সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে ইনটারনাল হেমারেজ ধরা পড়েছে! পেশেন্ট পার্টিকে জানানোও আছে অবস্থা ফিফটি ফিফটি! অন্তত বাহাত্তর ঘন্টা না গেলে ভরসা দেওয়ার মতো বলার উপায় নেই কিছু! পেশেন্টের অবস্থা কিছুটা স্টেবল হলেই একটা মেজর অপারেশন করতে হবে! আইসিসিইউতেই রাখা আছে! কিন্তু সকাল থেকেই পেশেন্টের পাল্সরেট ফল করে যাচ্ছে! সুগার হাই! ফলে অসুবিধেও আছে! রঞ্জন আছে! কন্স্ট্যান্ট মনিটরিং করেও যাচ্ছে! তবু ডিপার্টমেন্ট হেড হিসেবে সব দায়িত্ব মন্দিরারই! পার্কিং স্লটে গাড়ি রেখেই মন্দিরা লিফ্টের দিকে দৌড়ালো!
ডঃ রঞ্জন প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে দিয়েছেন! মন্দিরা পেশেন্টের অবস্থা দেখে নিউরোলজির জয়ন্ত বিশ্বাসকে ডেকে নিল! তিনি সব রিপোর্ট দেখে মাথা নারলেন! - মনে হচ্ছে সার্ভাইভ করবে না বুঝলেন!
-এখনই অপারেশনের রিস্কটা নিলে!
-গড নওজ! তবে পেশেন্ট পার্টি যদি রাজী হয়! বলেই নিতে হবে, চান্স নেই তবুও...
-রাইট! আমি বলে রেখেছি যদিও!
-না! দে সুড নো, উই আর ট্রাইং আওয়ার লেভেল বেস্ট আগেইনস্ট অল ওডস!
একচুয়্যালি চান্স ইজ ভেরী স্লীম!
মন্দিরা ডঃ রঞ্জনকেও ডেকে নিল! রঞ্জনও সহমত হলেন!
-যদিও লস্ট কেস, ইয়েট উই ক্যান গীভ ইট আ লাস্ট ট্রাই!
মন্দিরা ওটি রেডি করতে বলে পেশেন্ট পার্টির সাথে কথা বলে নিতে বলল ডঃ রঞ্জনকে!
ওটি থেকে বেরোতেই ভদ্রলোককে দেখে খুব চেনা চেনা মনে হল! কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারল না মন্দিরা! উদ্বিগ্ন মুখে পেশেন্টের খবর জানার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন! নীল রঙের কোট প্যান্টে দীর্ঘ ঋজু চেহাড়া! এক মাথা শাদা ঢেউ খেলানো চুল! বয়স হলেও নির্মেদ টান টান শরীর! মন্দিরা কে দেখেই একরাশ উৎকন্ঠা নিয়ে পেশেন্টের খবর জানতে চাইলেন!
আশ্বস্ত করার মতো অবস্থা নয়, তবু ডাক্তারিতে আশা করেই যেতে হয়!
বলল ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখতে! নিজে যার উপর কোনো ভরসাই রাখতে পারেনি কোনোদিন!
ভদ্রলোককে পেড়িয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎই চোখে পড়ে গেল ওর বাঁদিকের কানটা! আর তখনই টুটুনের শেষ কথাটা মনে পড়ে গেল মন্দিরার! এতগুলো বছর পর!
সেই দিনটার কথা আজও ভুলতে পারেনি মন্দিরা! মন্দিরা তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী! আর টুকুন যাদবপুরে আর্টসে সেকেণ্ড ইয়ার! ছাত্র রাজনীতির হাত ধরে ক্রমশই জড়িয়ে পড়ছে দলীয় রাজনীতিতে! রাজনীতির বিষয়ে তখনো বোঝবার মতে বয়স হয়নি মন্দিরার! তবু টুকুনের মুখে বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আর্থসামাজিক স্তরে রাজনীতির গুরুত্ব নিয়ে অনেক কথাই শুনতো! দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা, দূর্নীতির প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা, আরও কত কিছু নিয়ে একনাগারে বলে যেত টুকুন! খুবই রূপবান ছিল! বেশ একটা নায়কোচিত নেতৃত্বের ভাব ফুটে উঠত ওর উদ্বীপ্ত কন্ঠস্বরে! আর সেটাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো আকর্ষণ করতো ক্লাস নাইনের মন্দিরাকে!
সেদিনটা ছিল লক্ষ্মীপূজোর পরদিন! বুধবার! আগেরদিন বড়ো মাসীর বাড়িতে ধুমধাম করে লক্ষ্মীপূজোয় সবাই হইচই করেছে! টুকুন বরাবরই এসব ধর্মীয় বিষয় থেকে দূরে থাকলেও সবাই মিলে একজায়গায় জড়ো হওয়ার উৎসবে ঠিক সামিল হয়ে যেতো! কিন্তু সেদিন টুকুনের যেন কি হয়েছিল! সবার মাঝে থেকেও যেন একা হয়ে যাচ্ছিল! মন্দিরার বুঝতে অসুবিধে হয়নি, কিছু একটা সমস্যা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে ওর ভেতরে! প্রথমে জিজ্ঞাসা করেও সদুত্তর পায়নি! কিন্তু চাপা টেনশনের একটা আঁচ মাঝে মাঝেই ফুটে উঠছিল ওর চোখেমুখে! আর সেটা ঢাকার চেষ্টা করছিল এর ওর পেছনে লেগে! কেউ না বুঝলেও মন্দিরার বুঝতে দেরি হয়নি! টুকুনকে ও অনুভব করতে পারত অনেক গভীরে!
খুব বেশি কিছু বলেনি টুকুন! শুধু বলেছিল পার্টির মধ্যে দূর্নীতিগ্রস্ত মাফিয়ারাই শক্তিশালী হয়ে উঠছে দিনে দিনে! এদেরকে এক্সপোজ্ড করতে হবে! তখনো জানতো না হয়ত, মাফিয়াদের হাত কতটা লম্বা! পরের দিন খবর পেয়ে মন্দিরা যখন বড়ো মাসির বাড়ি পৌঁছালো তখন মেডিক্যাল থেকে টুকুনের ডেডবডি রওনা দিয়েছে! বড়ো মাসি তখন অচৈতন্য! কে বলবে এই বাড়িতেই আগের দিন অত আনন্দ উৎসব হয়েছে! সকালের বাজারটা টুকুনই করতো! কিন্তু সেদিন আর বাজারে গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি! বড়ো রাস্তার মোড়েই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে শুট করে দিয়ে চলে যায় দুটো ছেলে! গুলিবিদ্ধ টুকুনকে পাড়ার ছেলেরাই হাসপাতালে নিয়ে যায়! কিন্তু পথেই শেষ হয়ে যায় টুকুনের যাবতীয় প্রতিরোধ!
একজন মোটর সাইকেলে ছিল! আর একজন টুকুনকে গুলি করেই চালকের পিছনে উঠে পালিয়ে যায়! মৃত্যুর আগে পাড়ার ছেলেদেরই বলে যায় টুকুন! শুধু শেষ কথাটা বলেছিল, শ্যুটারের একটা কানে বিশাল একটা কালো জরুল! না আর কোনো কথা বলার সামর্থ্য হয়নি টুকুনের! সেই ক্লাস নাইন থেকে সেই দিনটা তাড়া করে বেড়ায় মন্দিরাকে! আজ এতগুলো বছর- সারাটা জীবন টুকুনের মতো আর কাউকেই খুঁজে পায়নি! বলা ভালো খুঁজতে চায়নি! বুকের নিভৃতে সেই স্মৃতিটুকু নিয়েই বাঁচিয়ে রেখেছে ওর টুকুনকে!
ভদ্রলোকের বাঁ কানেও বিশাল একটা কালো জরুল! শাদা চুলের ফাঁক দিয়েও চোখে পড়ে গেল মন্দিরার! অনেক, অনেক গুলো বিনিদ্র রজনী অপেক্ষা করেছিল হয়ত এই দিনটার জন্যেই!
শ্রীশুভ্র
(পর্ব=১)
গড়িয়াহাটার মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে মনে মনেই বিড়বিড় করছিল মন্দিরা! অদ্ভুত সব কাজকারবার এদেশের! দরকার রাসবিহারী রোডের উপর উড়ালপুল! তৈরী হল গড়িয়াহাট রোডের উপরে! আশ্চর্য্য! অথচ বাইপাস মুখি ট্রাফিকের সংখ্যা ঢাকুরিয়া মুখির থেকে অনেক বেশি! কিন্তু কে কাকে বোঝাবে? সিগন্যাল পেয়ে যেতেই যে একসিলেটরে চাপ দেবে সে উপায়ও নেই! এত ব্যস্ত একটা মোড়ে সেটা সম্ভবও নয়! মানুষের ভিড়ে গাড়ির ভিড়ে রাস্তা ফাঁকা পাওয়াই দুস্কর! তারপর যত্রতত্র অটো! কখন একটু ধাক্কা লেগে যাবে, দোষ হবে চারচাকার! সামনের শাদা রঙের সুইফ্টটাকে ওভারটেক করতেই আবার ফোনটা বেজে উঠল! ডেস্ক থেকেই ফোন করেছে! পেশেন্টের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে!
গতকালই গুরুতর আহত হয়ে এমার্জেন্সিতে ভর্ত্তি হয় একজন! মোটর সাইকেল একসিডেন্টে! মাথায় হেলমেট ছিল, তবুও সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে ইনটারনাল হেমারেজ ধরা পড়েছে! পেশেন্ট পার্টিকে জানানোও আছে অবস্থা ফিফটি ফিফটি! অন্তত বাহাত্তর ঘন্টা না গেলে ভরসা দেওয়ার মতো বলার উপায় নেই কিছু! পেশেন্টের অবস্থা কিছুটা স্টেবল হলেই একটা মেজর অপারেশন করতে হবে! আইসিসিইউতেই রাখা আছে! কিন্তু সকাল থেকেই পেশেন্টের পাল্সরেট ফল করে যাচ্ছে! সুগার হাই! ফলে অসুবিধেও আছে! রঞ্জন আছে! কন্স্ট্যান্ট মনিটরিং করেও যাচ্ছে! তবু ডিপার্টমেন্ট হেড হিসেবে সব দায়িত্ব মন্দিরারই! পার্কিং স্লটে গাড়ি রেখেই মন্দিরা লিফ্টের দিকে দৌড়ালো!
ডঃ রঞ্জন প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে দিয়েছেন! মন্দিরা পেশেন্টের অবস্থা দেখে নিউরোলজির জয়ন্ত বিশ্বাসকে ডেকে নিল! তিনি সব রিপোর্ট দেখে মাথা নারলেন! - মনে হচ্ছে সার্ভাইভ করবে না বুঝলেন!
-এখনই অপারেশনের রিস্কটা নিলে!
-গড নওজ! তবে পেশেন্ট পার্টি যদি রাজী হয়! বলেই নিতে হবে, চান্স নেই তবুও...
-রাইট! আমি বলে রেখেছি যদিও!
-না! দে সুড নো, উই আর ট্রাইং আওয়ার লেভেল বেস্ট আগেইনস্ট অল ওডস!
একচুয়্যালি চান্স ইজ ভেরী স্লীম!
মন্দিরা ডঃ রঞ্জনকেও ডেকে নিল! রঞ্জনও সহমত হলেন!
-যদিও লস্ট কেস, ইয়েট উই ক্যান গীভ ইট আ লাস্ট ট্রাই!
মন্দিরা ওটি রেডি করতে বলে পেশেন্ট পার্টির সাথে কথা বলে নিতে বলল ডঃ রঞ্জনকে!
ওটি থেকে বেরোতেই ভদ্রলোককে দেখে খুব চেনা চেনা মনে হল! কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারল না মন্দিরা! উদ্বিগ্ন মুখে পেশেন্টের খবর জানার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন! নীল রঙের কোট প্যান্টে দীর্ঘ ঋজু চেহাড়া! এক মাথা শাদা ঢেউ খেলানো চুল! বয়স হলেও নির্মেদ টান টান শরীর! মন্দিরা কে দেখেই একরাশ উৎকন্ঠা নিয়ে পেশেন্টের খবর জানতে চাইলেন!
আশ্বস্ত করার মতো অবস্থা নয়, তবু ডাক্তারিতে আশা করেই যেতে হয়!
বলল ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখতে! নিজে যার উপর কোনো ভরসাই রাখতে পারেনি কোনোদিন!
ভদ্রলোককে পেড়িয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎই চোখে পড়ে গেল ওর বাঁদিকের কানটা! আর তখনই টুটুনের শেষ কথাটা মনে পড়ে গেল মন্দিরার! এতগুলো বছর পর!
সেই দিনটার কথা আজও ভুলতে পারেনি মন্দিরা! মন্দিরা তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী! আর টুকুন যাদবপুরে আর্টসে সেকেণ্ড ইয়ার! ছাত্র রাজনীতির হাত ধরে ক্রমশই জড়িয়ে পড়ছে দলীয় রাজনীতিতে! রাজনীতির বিষয়ে তখনো বোঝবার মতে বয়স হয়নি মন্দিরার! তবু টুকুনের মুখে বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আর্থসামাজিক স্তরে রাজনীতির গুরুত্ব নিয়ে অনেক কথাই শুনতো! দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা, দূর্নীতির প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা, আরও কত কিছু নিয়ে একনাগারে বলে যেত টুকুন! খুবই রূপবান ছিল! বেশ একটা নায়কোচিত নেতৃত্বের ভাব ফুটে উঠত ওর উদ্বীপ্ত কন্ঠস্বরে! আর সেটাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো আকর্ষণ করতো ক্লাস নাইনের মন্দিরাকে!
সেদিনটা ছিল লক্ষ্মীপূজোর পরদিন! বুধবার! আগেরদিন বড়ো মাসীর বাড়িতে ধুমধাম করে লক্ষ্মীপূজোয় সবাই হইচই করেছে! টুকুন বরাবরই এসব ধর্মীয় বিষয় থেকে দূরে থাকলেও সবাই মিলে একজায়গায় জড়ো হওয়ার উৎসবে ঠিক সামিল হয়ে যেতো! কিন্তু সেদিন টুকুনের যেন কি হয়েছিল! সবার মাঝে থেকেও যেন একা হয়ে যাচ্ছিল! মন্দিরার বুঝতে অসুবিধে হয়নি, কিছু একটা সমস্যা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে ওর ভেতরে! প্রথমে জিজ্ঞাসা করেও সদুত্তর পায়নি! কিন্তু চাপা টেনশনের একটা আঁচ মাঝে মাঝেই ফুটে উঠছিল ওর চোখেমুখে! আর সেটা ঢাকার চেষ্টা করছিল এর ওর পেছনে লেগে! কেউ না বুঝলেও মন্দিরার বুঝতে দেরি হয়নি! টুকুনকে ও অনুভব করতে পারত অনেক গভীরে!
খুব বেশি কিছু বলেনি টুকুন! শুধু বলেছিল পার্টির মধ্যে দূর্নীতিগ্রস্ত মাফিয়ারাই শক্তিশালী হয়ে উঠছে দিনে দিনে! এদেরকে এক্সপোজ্ড করতে হবে! তখনো জানতো না হয়ত, মাফিয়াদের হাত কতটা লম্বা! পরের দিন খবর পেয়ে মন্দিরা যখন বড়ো মাসির বাড়ি পৌঁছালো তখন মেডিক্যাল থেকে টুকুনের ডেডবডি রওনা দিয়েছে! বড়ো মাসি তখন অচৈতন্য! কে বলবে এই বাড়িতেই আগের দিন অত আনন্দ উৎসব হয়েছে! সকালের বাজারটা টুকুনই করতো! কিন্তু সেদিন আর বাজারে গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি! বড়ো রাস্তার মোড়েই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে শুট করে দিয়ে চলে যায় দুটো ছেলে! গুলিবিদ্ধ টুকুনকে পাড়ার ছেলেরাই হাসপাতালে নিয়ে যায়! কিন্তু পথেই শেষ হয়ে যায় টুকুনের যাবতীয় প্রতিরোধ!
একজন মোটর সাইকেলে ছিল! আর একজন টুকুনকে গুলি করেই চালকের পিছনে উঠে পালিয়ে যায়! মৃত্যুর আগে পাড়ার ছেলেদেরই বলে যায় টুকুন! শুধু শেষ কথাটা বলেছিল, শ্যুটারের একটা কানে বিশাল একটা কালো জরুল! না আর কোনো কথা বলার সামর্থ্য হয়নি টুকুনের! সেই ক্লাস নাইন থেকে সেই দিনটা তাড়া করে বেড়ায় মন্দিরাকে! আজ এতগুলো বছর- সারাটা জীবন টুকুনের মতো আর কাউকেই খুঁজে পায়নি! বলা ভালো খুঁজতে চায়নি! বুকের নিভৃতে সেই স্মৃতিটুকু নিয়েই বাঁচিয়ে রেখেছে ওর টুকুনকে!
ভদ্রলোকের বাঁ কানেও বিশাল একটা কালো জরুল! শাদা চুলের ফাঁক দিয়েও চোখে পড়ে গেল মন্দিরার! অনেক, অনেক গুলো বিনিদ্র রজনী অপেক্ষা করেছিল হয়ত এই দিনটার জন্যেই!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন